1. বাংলাদেশের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী কবে গৃহীত হয়?
বাংলাদেশ সংবিধানের প্রথম সংশোধনী:
- ১৯৭৩ সালের ১৫ জুলাই বাংলাদেশ সংবিধানে প্রথম সংশোধনী আনা হয়।
- এ সংশোধনীতে বাংলাদশ সংবিধানের ৪৭নং অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করা হয়।
- উক্ত সংশোধনীর মাধ্যমে ৪৭-(ক) নামে একটি নতুন অনুচ্ছেদ সন্নিবেশিত হয়েছে।
- প্রথম সংশোধনীর মূল বিষয়বস্তু ছিল 'গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনে অন্যান্য অপরাধ' এর বিচার ও শাস্তি অনুমোদন।
- এ সংশোধনীর ফলে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী ও গণহত্যার অভিযোগে বন্দিদের বিচারের পথ সহজ হয়।
উৎস: বাংলাদেশের রাজনৈতিক উন্নয়ন, এসএসএইচএল, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।
- বাংলাদেশ সংবিধান সহজে পরিবর্তন করা যায় না।
- এ সংবিধান দুস্পরিবর্তনীয় ধরনের।
- সাধারণ আইন প্রণয়ন পদ্ধতিতে এ সংবিধান সংশোধন করা যায় না।
- বাংলাদেশ সংবিধান পরিবর্তনের জন্য বিশেষ পদ্ধতির প্রয়োজন হয়।
- সংবিধানের দশম ভাগের ১৪২নং অনুচ্ছেদে বিধান রয়েছে যে, সংসদ আইনের দ্বারা বাংলাদেশের সংবিধানের কোন বিধান সংশোধিত বা রহিত করা যেতে পারে।
তবে দুটি শর্ত পালনযোগ্য:
১. অনুরূপ সংশোধীর জন্য আনীত কোন বিলের সম্পূর্ণ শিরোনামে এই সংবিধানের কোন বিধান সংশোধন করা হবে বলে স্পষ্টরূপে উল্লেখ না থাকলে বিলটি বিবেচনার জন্য গ্রহণ করা যাবে না।
২. সংসদের মোট সদস্য সংখ্যার ন্যূনতম দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত না হলে অনুরূপ কোন বিলে সম্মতি দানের জন্য তা রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপিত হবে না।
উৎস: বাংলাদেশের রাজনৈতিক উন্নয়ন, এসএসএইচএল, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।
3. কোন সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করা হয়?
সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী:
- দ্বাদশ সংশোধনী আইন বাংলাদেশের সাংবিধানিক বিকাশের ইতিহাসে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে খ্যাত এই সংশোধনী আইন পাস হয় ১৯৯১ সালের ৬ আগস্ট।
- এর দ্বারা সংবিধানের ৪৮, ৫৫, ৫৬, ৫৮, ৫৯, ৬০, ৭০, ৭২. ১০৯, ১১৯, ১২৪, ১৪১ক এবং ১৪২ অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হয়।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে -
- বাংলাদেশে সংসদীয় সরকার পদ্ধতির পুনঃপ্রবর্তন ঘটে;
- রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রধান হন;
- প্রধানমন্ত্রী হন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী;
- প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদ জাতীয় সংসদের কাছে দায়বদ্ধ হয়;
- উপ-রাষ্ট্রপতির পদ বিলোপ করা হয়,
- জাতীয় সংসদের সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান করা হয়।
তাছাড়া,
- সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে এই আইনে স্থানীয় সরকার কাঠামোতে জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়, যা দেশে গণতন্ত্রের ভিত্তি সুদৃঢ় করে।
অন্যদিকে -
- দশম সংশোধনীতে নারীদের জন্য সংসদে আসন ১৫ থেকে ৩০ এ বাড়ানো হয়।
- ষষ্ঠ সংশোধনীর মাধ্যমে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী পদকে প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদ বলে গণ্য করা হবে না।
- সপ্তম সংশোধনীর মাধ্যমে সামরিক শাসনামলে জারি করা সব আদেশ, আইন ও নির্দেশকে বৈধতা দেওয়া হয় এবং আদালতে এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন না করার বিধান করা হয়। এ সংশোধনীতে বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ করা হয়।